তামিম আহমেদ
তামিম আহমেদ
15 Mar 2024 (2 months ago)
আড়াইহাজার, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা, বাংলাদেশ

ব্যাকরণিক শব্দশ্রেণি | বাংলা ২য় পত্র ব্যাকরণ | একাদশ-দ্বাদশ | এইচএসসি (HSC)


Listen to this article

ধ্বনি, শব্দ ও শব্দশ্রেণির মধ্যে পার্থক্য কী?

  • ধ্বনি : মানুষের মুখ নিঃসৃত অর্থবোধক আওয়াজকে ধ্বনি বলে।
  • শব্দ : অর্থপূর্ণ ধ্বনি বা ধ্বনি সমষ্টিকে শব্দ বলে। যেমন- বই, খাতা, কলম ইত্যাদি।
  • পদ : বাক্যে ব্যবহৃত প্রত্যেকটি শব্দ ও ধাতুকে পদ বলে। যেমন- শিক্ষক ছাত্রদের পড়াচ্ছেন। এই বাক্যে প্রতিটি শব্দ অর্থাৎ ‘শিক্ষক, ছাত্রদের, পড়াচ্ছেন প্রতিটি শব্দই পদ।

সুতরাং অর্থপূর্ণ ধ্বনি বা ধ্বনি সমষ্টি হলেই তা শব্দ হবে কিন্তু পদ হবে না যতক্ষণ না পর্যন্ত তা কোনো বাক্যে ব্যবহৃত হয়।

অর্থাৎ সকল পদই শব্দ কিন্তু সকল শব্দ পদ নয়।

ব্যাকরণিক শব্দশ্রেণির শ্রেণিবিভাগ:

বাংলা ভাষার শব্দশ্রেণিকে ৮ ভাগে ভাগ করা হয়। যথা-

  1. বিশেষ্য
  2. বিশেষণ
  3. সর্বনাম
  4. ক্রিয়া
  5. ক্রিয়া বিশেষণ
  6. অনুসর্গ
  7. আবেগ
  8. যোজক

বিশেষ্য

বিশেষ্য : কোনো কিছুর নামকে বিশেষ্য পদ বলে। অর্থাৎ যে পদ দ্বারা কোনো ব্যক্তি, বস্তু, জাতি, সমষ্টি, স্থান, কাল, ভাব বা গুণের নাম বোঝায় তাকে বিশেষ্য পদ বলে। যেমন– নাহিদ, কলম, রাজশাহী, সততা, শয়ন ইত্যাদি।

বিশেষ্য পদ আবার ৬ প্রকার। যথা-

  1. সংজ্ঞা বা নামবাচক বিশেষ্য
  2. জাতিবাচক বিশেষ্য
  3. সমষ্টিবাচক বিশেষ্য
  4. বস্তু বা দ্রব্যবাচক বিশেষ্য
  5. গুণবাচক বিশেষ্য
  6. ভাববাচক বিশেষ্য

1. সংজ্ঞা বা নামবাচক বিশেষ্য: যে পদ দ্বারা ব্যক্তি, স্থান, নদ-নদী, পাহাড় পর্বত কিংবা গ্রন্থের নাম বোঝায় তাকে সংজ্ঞা বা নামবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন– জান্নাতি, রংপুর, পদ্মা, হিমালায়, গীতাঞ্জলি ইত্যাদি।

2. জাতিবাচক বিশেষ্য: যে পদ দ্বারা একজাতীয় কোনো প্রাণী বা পদার্থের সাধারণ নাম বোঝায় তাকে জাতিবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন– মানুষ, গাছ, গরু, ছাগল, সন্তান ইত্যাদি। ইংরেজিতে জাতিবাচক বিশেষ্যকে বলে Common Noun.

3. সমষ্টিবাচক বিশেষ্য: যে পদ দ্বারা কোনো ব্যক্তি বা প্রাণীর সমষ্টিকে বোঝায় তাকে সমষ্টিবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন– জনতা, দল, ঝাঁক, সমিতি ইত্যাদি। ইংরেজিতে সমষ্টিবাচক বিশেষ্য বলে Collective Noun.

4. বস্তু বা দ্রব্যবাচক বিশেষ্য: যে পদ দ্বারা কোনো বস্তু বা উপাদানবাচক পদার্থের নাম কিংবা কোনো দ্রব্যের নাম বোঝায় তাকে বস্তু বা দ্রব্যবাচক বিশেষ্য পদ বলে। যেমন– বই, খাতা, কলম, ইত্যাদি।

5. গুণবাচক বিশেষ্য পদ: যে বিশেষ্য পদ দ্বারা কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর দোষ বা গুণের নাম বোঝায় তাকে গুণবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন– সততা (ব্যক্তির গুণ), মধুরতা (তিক্ত দ্রব্যের দোষ বা গুণ), তারল্য (তরল দ্রব্যের গুণ), তারুণ্য (তরুণের গুণ)

6. ভাববাচক বিশেষ্য: যে বিশেষ্য পদ দ্বারা কোনো ক্রিয়ার ভাব বা কাজের ভাব প্রকাশিত হয়, তাকে ভাববাচক বিশেষ্য পদ বলে। যেমন– ভোজন (খাওয়ার কাজ), শয়ন (শুয়ে থাকা ভাব), গমন (যাওয়ার ভাব বা কাজ), দর্শন (দেখার কাজ)

বিশেষণ

বিশেষণ : যে পদ বিশেষ্য, সর্বনাম ও ক্রিয়াপদের দোষ, গুণ, সংখ্যা, পরিমাণ ইত্যাদি নির্দেশ করে তাকে বিশেষণ পদ বলে। যেমনলাল পরী। বিশেষণ পদ ২ প্রকার। যথা

  1. নাম বিশেষণ
  2. ভাব বিশেষণ

1. নাম বিশেষণ: যে বিশেষণ পদ কোনো বিশেষ্য ও সর্বনাম পদকে বিশেষিত করে তাকে নাম বিশেষণ বলে। যেমন- সাদা পাঞ্জাবি, বোকা ছেলে, তাজা মাছ, ত্রিশ টাকা, দশ কেজি চাল, ষোল আনা, দোআঁশ মাটি, সেই মেয়েটি, কতদূর পথ? ইত্যাদি।

2. ভাব বিশেষণ: যে বিশেষণ পদ বিশেষ্য ও সর্বনাম পদ ছাড়া অন্য কোনো পদকে বিশেষিত করে তাকে ভাব বিশেষণ বলে। যেমনআস্তে হাঁটো (ক্রিয়াকে বেশিষিত করছে), জিনিসটা সাবধানে রাখ (ক্রিয়াকে বেশিষিত করছে), সে খুব ভালো ছেলে (বিশেষণকে বিশেষিত করছে)

সর্বনাম

সর্বনাম: বিশেষ্য পদের পরিবর্তে যে পদ ব্যবহার করা হয়, তাকে সর্বনাম পদ বলে।

সর্বনামের প্রকারভেদ:

ব্যক্তিবাচক বা পুরুষবাচক সর্বনাম:

যে সকল সর্বনাম ব্যক্তিবিশেষের বা ব্যক্তিসমূহকে নির্দেশ করে বা এদের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়, তাদেরকে ব্যক্তিবাচক সর্বনাম বলা হয়। এরই অপর নাম পুরুষবাচক সর্বনাম।

নাহিদ ভালো ছেলে। নাহিদের অনেক বন্ধু আছে। অথবা নাহিদ ভালো ছেলে। তার (বা এর) অনেক বন্ধু আছে।

আত্মবাচক সর্বনাম

যে সকল সর্বনামের কর্তা নিজেই কর্মের অধীনে চলে যায় তাকে আত্মবাচক সর্বনাম বুঝায়। যেমনঃ আমি নিজেই অফিস করি।

সামীপ্যবাচক সর্বনাম

সামীপ্য-নির্দেশবাচক প্রচ্ছন্ন নির্দেশ বহন করে এবং নৈকট্য প্রকাশ করে। যেমনঃ

ওই দেখা যায় তাল গাছ।
ওই দুঃখে আমার জনম গেল।

সাকল্যবাচক সর্বনাম

যে সকল সর্বনাম দ্বারা সমষ্টিগত ভাব প্রকাশ পায়, তাকেই সাকল্যবাচক সর্বনাম বলা হয়। যেমন– আদ্যোপান্ত, সকল, সব, সবাই, সমুদয়, তাবৎ। যেমনঃ আমার সকল নিয়ে বসে আছি সর্বনাশের আশায়।

প্রশ্নবাচক সর্বনাম

যে সকল সর্বনাম দ্বারা বক্তার প্রশ্ন প্রকাশ পায় বা নির্দেশিত হয়, তাদেরকে প্রশ্নবাচক সর্বনাম বলা হয়। এই শ্রেনীবিন্যাসের মাঝের সর্বনামগুলো- কে, কি, কী, কোন, কাহার, কার, কাহাদের, কাদের, কিসে, কে কে, কি কি, কোন কোন, কার কার। যেমনঃ কী কথা বলিস তুই, আমি যে তোর ভাষা বুঝি নে।

সাপেক্ষ সর্বনাম

যে সকল সর্বনাম দ্বারা একটি বাক্যের সাপেক্ষে অন্য বাক্যকে যুক্ত করা হয়, তাদেরকে সাপেক্ষ সর্বনাম বলা হয়। যেমনঃ এই সেই লোক, যে গতকাল এখানে এসেছিল। যে-সে, যিনি-তিনি, যাহা-তাহা, যা-তা, যাকে-তাকে

অন্যাদিবাচক সর্বনাম

যে সকল সর্বনাম দ্বারা অন্য, অপর, ভিন্ন, অসদৃশ্য, অন্যপ্রকার, অধিক ইত্যাদি নির্দেশিত হয়, সে সকল সর্বনামকে অন্যাদিবাচক সর্বনাম বলা হয়। যেমন: অন্য, অপর, ভিন্ন।

যৌগিক সর্বনাম

যখন একাধিক শব্দ একত্রিত হয়ে একটি সর্বনাম তৈরি করে, তখন তাকে যৌগিক সর্বনাম বলে। যেমন– অন্য-কিছু, অন্য-কেউ, আর-কিছু, আর-কেউ, কেউ-না-কেউ, কেউ-বা, যা-কিছু, যা- তা, যে-কেউ, যে-কোন, যে-সে।

ক্রিয়া

যে পদ দ্বারা কোনো কাজ সম্পাদন করা বোঝায় অর্থাৎ কোনো কিছু করা, হওয়া, খাওয়া, যাওয়া ইত্যাদি বোঝায় তাকে ক্রিয়া বলে। যেমন– রায়হান হাসছে। সে বই পড়ে

ক্রিয়াপদকে বিভিন্ন দিক থেকে প্রকারভেদ করা হয়।

  • গঠন অনুসারে ক্রিয়াপদ কয়েক প্রকার হয়ে থাকে।
  • ভাব প্রকাশের দিক থেকে ক্রিয়াপদ ২ প্রকার।
  • কর্মপদের ভূমিকা অনুসারে ক্রিয়াপদ ৩ প্রকার।

গঠন অনুসারে ক্রিয়াপদ কয়েক প্রকার হয়ে থাকে।

যেমন– যৌগিক ক্রিয়া, মিশ্র ক্রিয়া, নামধাতুর ক্রিয়া, প্রযোজক ক্রিয়া।

যৌগিক ক্রিয়া : একটি সমাপিকা ও একটি অসমাপিকা ক্রিয়া এক সাথে বিশেষ ভাব প্রকাশ করলে তাকে যৌগিক ক্রিয়া বলে। সহজ কথায় ক্রিয়া পূর্বে ক্রিয়া তাকে বলে যৌগিক ক্রিয়া।

যেমন – সে পাস করে গেল। সাইলেন বেজে গেল

মিশ্র ক্রিয়া: বিশেষ্য, বিশেষণ ও ধ্বনাত্মক অব্যয়ের সঙ্গে ধর্, কর্, মার্, ছাড়, হ্, দে, পা, কাট্ যা, খা প্রভৃতি ধাতুযোগে গঠিত ক্রিয়াপদ বিশেষ বিশেষ অর্থে মিশ্র ক্রিয়া গঠন করে।

যেমন

  • বিশেষ্যের পরে: আমরা তাজমহল দর্শন করলাম
  • বিশেষণের পরে: তোমাকে দেখে বিশেষ প্রীত হলাম
  • ধ্বনাত্মক অব্যয়ের উত্তর (পরে): মাথা ঝিম ঝিম্ করছে। ঝম্ ঝম্ করে বৃষ্টি পড়ছে।

নামধাতুর ক্রিয়া: বিশেষ্য, বিশেষণ ও ধ্বনাত্মক অব্যয়ের পরে ‘আ’ প্রত্যয়যোগে যে ধাতু গঠিত হয় তাকে নামধাতু বলে। আর নামধাতুর সাথে পুরুষ বা কালসূচক ক্রিয়া বিভক্তি যোগে যে ক্রিয়া গঠিত হয় তাকে নামধাতুর ক্রিয়া বলে।

যেমন-

  • (বিশেষ্য + ‘আ’ প্রত্যয়) বেত + আ = বেতা (নামধাতু)। উদাহরণ- শিক্ষক ছাত্রটিকে বেতাচ্ছেন
  • (বিশেষণ + ‘আ’ প্রত্যয়) বাঁক + আ = বাঁকা (নামধাতু)। উদাহরণ- কঞ্চিটি বাঁকিয়ে ধর।

প্রযোজক ক্রিয়া: যে ক্রিয়া একজনের প্রযোজনায় অন্য কর্তৃক অনুষ্ঠিত হয় তাকে প্রযোজক ক্রিয়া বলে। প্রযোজক ক্রিয়ার দ্বারা অন্যকে কাজ করানো বোঝায়। অন্যকে কাজ করানোর ২ রকমের হয়ে থাকে। যে করাচ্ছে, সে সক্রিয় থেকে অন্যকে কাজ করাতে পারে। যেমন- শিক্ষক ছাত্রদের পড়াচ্ছেন। এখানে ‘শিক্ষক’ সক্রিয়।

আবার “বাবু চাকরকে বাগান পরিষ্কার করাচ্ছেন।” এখানে ‘বাবু’ নিষ্ক্রিয় প্রেরণাদাতা। কিন্তু এই দুটিই প্রযোজক ক্রিয়া।

ভাব প্রকাশের দিক থেকে ক্রিয়াপদ ২ প্রকার।

  1. সমাপিকা ক্রিয়া
  2. অসমাপিকা ক্রিয়া

সমাপিকা ক্রিয়া : যে ক্রিয়াপদ দ্বারা বাক্যের অর্থের পূর্ণতা পায় তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে। যেমন– আমি স্কুলে যাই।
অসমাপিকা ক্রিয়া: যে ক্রিয়াপদ দ্বারা বাক্যের অর্থের পূর্ণতা পায় না তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে।

যেমন

১. আমি কাজ শেষ করে……….
২. প্রভাতে সূর্য উঠলে.

একটি বাক্য নেওয়া যাক: “আমি ভাত খেয়ে স্কুলে যাবো।” এই বাক্যে দুটি ক্রিয়াপদ রয়েছে– ‘খেয়ে’ ও ‘যাবো’। লক্ষ করলে দেখা যাচ্ছে ‘যাবো’ ক্রিয়াটি বলা মাত্রই আমরা একটি সম্পূর্ণ ভাব উপলব্ধি করতে পারছি। কিন্তু যদি বলা হয় “আমি ভাত খেয়ে”, তাহলে ক্রিয়া পদ থাকা সত্ত্বেও বাক্যের ভাবটি সম্পূর্ণ হচ্ছে না। অথচ যদি বলা হয় “আমি যাবো” তাহলেও অর্থ প্রকাশে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। সুতরাং বোঝা যাচ্ছে ‘খেয়ে’ ক্রিয়াটি একক ভাবে বাক্যের ভাবকে সম্পূর্ণ করতে সক্ষম নয়। অপরদিকে ‘যাবো’ ক্রিয়াটি বাক্যের ভাবকে সম্পূর্ণ করতে সক্ষম।

কর্মপদের ভূমিকা অনুসারে ক্রিয়াপদ ৩ প্রকার।

সকর্মক ক্রিয়া : যে ক্রিয়ার কর্মপদ আছে তাকেই সকর্মক ক্রিয়া বলে। যেমন– মিলন ক্রিকেট খেলে।

অকর্মক ক্রিয়া: যে ক্রিয়ার কর্মপদ নেই তাকেই অকর্মক ক্রিয়া বলে। যেমন- জাহিদ খেলে। মিলন ঘুমায়

দ্বিকর্মক ক্রিয়া: যে ক্রিয়ার ২ টি কর্মপদ আছে তাকেই দ্বিকর্মক ক্রিয়া বলে। যেমন– নাহিদ মিলনকে মোবাইল কিনে দিয়েছে।

ক্রিয়া বিশেষণ

ক্রিয়া বিশেষণ : যে বিশেষণ ক্রিয়াকে বিশেষিত করে অর্থাৎ ক্রিয়া সংঘটনের ভাব, কাল, অবস্থা বা স্থানকে প্রভাবিত করে তাকে ক্রিয়া বিশেষণ বলে। যেমন-

  • বাসটি দ্রুত চলতে শুরু করল।
  • আমি গতকাল ঢাকা গিয়েছিলাম।

অনুসর্গ

অনুসর্গ : ‘অনু’ কথাটির অর্থ পরে বা পশ্চাতে, আর ‘সর্গ’ মানে সৃষ্টি বা ব্যবহার। সুতরাং সাধারণভাবে অনুসর্গ বলতে বোঝায় যা পরে ব্যবহৃত হয়। বাংলা ভাষায় যে অব্যয় শব্দগুলো কখনো স্বাধীন পদরূপে, আবার কখনো শব্দ বিভক্তির ন্যায় বাক্যে ব্যবহৃত হয়ে বাক্যের অর্থ প্রকাশে সাহায্য করে, সেগুলোকে অনুসর্গ বা কর্মপ্রবচনীয় বলা হয়।

বাংলা ভাষার কয়েকটি অনুসর্গ: প্রতি, বিনা, বিহনে, সহ, ওপর, অবধি, হেতু, অবধি, মাঝে, পরে, ভিন্ন, বই, ব্যতীত, জন্যে, জন্য, পর্যন্ত, অপেক্ষা, সহকারে, তরে, পানে, নামে, মতো, নিকট, অধিক, পক্ষে, দ্বারা, দিয়া, দিয়ে, কর্তৃক, সঙ্গে, হইতে, হতে, থেকে, চেয়ে, পাছে, ভিতর, ভেতর ইত্যাদি।

আবেগ শব্দ

আবেগ শব্দ : যেসব শব্দ বাক্যের অন্য শব্দের সঙ্গে সম্পর্ক না রেখে স্বাধীনভাবে বাক্যে ব্যবহৃত হয় এবং মনের নানা ভাব বা আবেগ প্রকাশ করে, সেগুলোকে বলা হয় আবেগ শব্দ। যেমন

  • বাঃ! চমৎকার একটা গল্প লিখেছ!
  • আঃ! কী বিপদ!
  • ছি! ছি! এটা তুমি কী বললে!
  • হে বন্ধু, তোমাকে অভিনন্দন।

যোজক

যোজক: যে পদ একটি বাক্যের সাথে অন্য একটি বাক্যের কিংবা বাক্যের অন্তর্গত একটি পদের সাথে অন্য পদের সংযোজন, বিয়োজন বা সংকোচন ঘটায় তাকে যোজক বলে।

যেমন-
১. সুখ সমৃদ্ধি কে না চায়?
২. অলি আর কলি একে অন্যের বন্ধু।
৩. সারা দিন খুঁজলাম, অথচ কোথাও গরুটা পেলাম না।
৪. এত বৃষ্টি হলো, তবু গরম গেল না।
৫. তোমাকে খবর দিয়েছি, কিন্তু তুমি আসোনি।
৬. খুব ঠাণ্ডা লেগেছে, তাই আইসক্রিম খাচ্ছি না।

অনুশীলন প্রশ্ন

১. নিম্নরেখ যেকোনো পাঁচটি শব্দের ব্যাকরণিক শ্রেণি নির্দেশ করো:

একটু মিটমিট করিয়া ক্ষুদ্র আলো জ্বলিতেছে দেয়ালের উপর চঞ্চল ছায়া, প্রেতবৎ নাচিতেছে। আহার প্রস্তুত হয় নাই এজন্য হুঁকা হাতে, নিমীলিতলোচনে আমি ভাবিতেছিলাম যে, আমি যদি নেপোলিয়ন হইতাম, তবে ওয়াটারলু জিতিতে পারিতাম কি না।

উত্তর: ক. মিটমিট – ক্রিয়া বিশেষণ; খ. ক্ষুদ্র-বিশেষণ; গ. নাচিতেছে -ক্রিয়া; ঘ. হুঁকা -বিশেষ্য; ঙ.তবে -যোজক।

২. নিচের অনুচ্ছেদ থেকে পাঁচটি বিশেষণ পদ চিহ্নিত করো:

আছেন তো ভালো? ছেলেমেয়ে? কিছু আলাপের পর দেখিয়ে সফেদ দেয়ালের শান্ত ফটোগ্রাফটিকে বললাম জিজ্ঞাসু অতিথিকে।

উত্তর: ক. ভালো খ. কিছু গ. সফেদ ঘ. শান্ত ঙ. জিজ্ঞাসু।

৩. নিচের অনুচ্ছেদ থেকে পাঁচটি ক্রিয়া বিশেষণ শনাক্ত করো।

বাবা সকালে দ্রুত বেরিয়ে গেছেন। তখন টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছিল। ঘরে বসে একমনে টিভি দেখছিল ছোট বোন। এসময় কেউ টিভিতে গুনগুনিয়ে গান করছিল। হঠাৎ বাবা এসে বলল, তার চশমাটা চট করে খুঁজে দিতে।

উত্তর: ক. সকালে, খ. তখন গ. দ্রুত ঘ. একমনে ঙ. গুনগুনিয়ে।

৪. নিচের অনুচ্ছেদ হতে পাঁচটি বিশেষণ নির্বাচন করো।

সকালে মা তার ঘুমন্ত শিশুকে জাগিয়ে গরম দুধ খাওয়ালেন। এরপর আড়াই বছরের অবুঝ শিশুটিকে নিয়ে বাগানে লাল লাল ফুল দেখালেন। সদ্যোজাত ফুলগুলো ছিল চমৎকার। ঝকঝকে রোদে পরিবেশও ছিল সুখকর।

উত্তর: ক. ঘুমন্ত খ. গরম গ. অবুঝ ঘ. সদ্যোজাত ঙ. সুখকর।

৫. নিচের অনুচ্ছেদ থেকে পাঁচটি ক্রিয়াপদ চিহ্নিত করো।

“এতদিন যে প্রতি সন্ধ্যায় আমি বিনুদাদার বাড়িতে গিয়া তাহাকে অস্থির করিয়া তুলিয়াছিলাম! বিনুদার বর্ণনার ভাষা অত্যন্ত সংকীর্ণ বলিয়াই তার প্রত্যেক কথাটি স্ফুলিঙ্গের মতো আমার মনের মাঝখানে আগুন জ্বালিয়া দিয়াছিল। বুঝিয়াছিলাম মেয়েটির রূপ বড়ো আশ্চর্য; কিন্তু না দেখিলাম তাহাকে চোখে, না দেখিলাম তাহার ছবি, সমস্তই অস্পষ্ট হইয়া রহিল।”

উত্তর: ক. তুলিয়াছিলাম খ. দিয়াছিল গ. বুঝিলাম ঘ. দেখিলাম ঙ. রহিল।

৬. নিচের অনুচ্ছেদ থেকে পাঁচটি সর্বনাম নির্বাচন করো।

কবি কাজী নজরুলের জীবনের পরিণাম অত্যন্ত করুণ। মস্তিষ্কের পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়ে ১৯৪২ সাল থেকেই তিনি ছিলেন নির্বাক ও ভাবশূন্য। ১৯৭৬ সালে কবির জীবনপ্রদীপ নির্বাপিত হলে তার সমাধি রচিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদ প্রাঙ্গণে। গানে তিনি এ আশা ব্যক্ত করেছিলেন, ‘মসজিদেরই পাশে আমায় কবর দিয়ো ভাই’। তার সে ইচ্ছা পূর্ণ হয়েছে।

উত্তর: ক. তিনি খ. তার গ. সে ঘ. এ ঙ. আমায়।

৭. নিচের অনুচ্ছেদ থেকে পাঁচটি ক্রিয়া বিশেষণ চিহ্নিত করো।

ইট বসানো রাস্তা দিয়ে করিম বাড়ি ফিরছিল। হঠাৎ দেখতে পেল চলন্ত বাস থেকে যাত্রীরা লাফিয়ে নামছে। হাঁটা-পথের অনেকেই দৃশ্যটি তাকিয়ে দেখল। কয়েক জনের যায়-যায় অবস্থা। কাঁদো-কাঁদো চেহারার মানুষগুলোকে দেখে করিম মনে কষ্ট পেল।

উত্তর: ক. হঠাৎ খ. লাফিয়ে গ. তাকিয়ে ঘ. যায় যায় অবস্থা ঙ. কষ্ট।

৮. নিচের অনুচ্ছেদ থেকে পাঁচটি বিশেষণ নির্বাচন কর। (Give ans below comment section.)

আদি কবি বাল্মীকি একদিন কাক ডাকা ভোরে সবুজ ঘাসের উপর আনমনে বসে গাছের ডালে বসা চঞ্চল দুটি সাদা বক ও বকীর দিকে তাকাচ্ছিলেন। এমন সময় একজন শিকারী নিচ থেকে সোনালি রঙের তীর নিক্ষেপ করলেন। একটি বকের দেহে তীর বিদ্ধ হলো। বেখেয়ালি কবি বললেন দুটি শ্লোক। এভাবেই প্রথম কবিতার জন্ম।

175 Views
No Comments
Forward Messenger
1
বাংলা ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ | বাংলা ২য় পত্র ব্যাকরণ | একাদশ-দ্বাদশ | এইচএসসি (HSC)
-
- -
বাক্য ও বাক্যের প্রকারভেদ | বাংলা ২য় পত্র ব্যাকরণ | একাদশ-দ্বাদশ | এইচএসসি (HSC)
-
- -
বাক্যের রুপান্তর | বাংলা ২য় পত্র ব্যাকরণ | একাদশ-দ্বাদশ | এইচএসসি (HSC)
-
- -
ক্রিয়ার ভাব | বাংলা ২য় পত্র ব্যাকরণ | একাদশ-দ্বাদশ | এইচএসসি (HSC)
-
- -
সমাস | বাংলা ২য় পত্র ব্যাকরণ | একাদশ-দ্বাদশ | এইচএসসি (HSC)
-
- -
প্রকৃতি ও প্রত্যয় | বাংলা ২য় পত্র ব্যাকরণ | একাদশ-দ্বাদশ | এইচএসসি (HSC)
-
- -
বাংলা শব্দ গঠন পদ্ধতি | বাংলা ২য় পত্র ব্যাকরণ | একাদশ-দ্বাদশ | এইচএসসি (HSC)
-
- -
পদ | বাংলা ২য় পত্র ব্যাকরণ | একাদশ-দ্বাদশ | এইচএসসি (HSC)
-
- -
বাংলা বানানের নিয়ম | বাংলা ২য় পত্র ব্যাকরণ | একাদশ-দ্বাদশ | এইচএসসি (HSC)
-
- -
উচ্চারণ রীতি | বাংলা ২য় পত্র ব্যাকরণ | একাদশ-দ্বাদশ | এইচএসসি (HSC)
-
- -
No comments to “ব্যাকরণিক শব্দশ্রেণি | বাংলা ২য় পত্র ব্যাকরণ | একাদশ-দ্বাদশ | এইচএসসি (HSC)”