Contents
সমাসঃ
সমাস মানে সংক্ষেপ, মিলন, একাধিক পদের একপদীকরণ। অর্থসম্বন্ধ আছে এমন একাধিক শব্দের এক সঙ্গে যুক্ত হয়ে একটি নতুন শব্দ গঠনের প্রক্রিয়া কে সমাস বলে।
যেমন: দেশের সেবা দেশসেবা।
সমাসের বিভিন্ন অংশঃ
সমস্তপদঃ
সমাসের প্রক্রিয়ায় সমাসবদ্ধ বা সমাস নিষ্পন্ন পদটির নাম সমস্ত পদ।
যেমনঃ বিলাত হতে ফেরত বিলাতফেরত।
এখানে, বিলাতফেরত হলো সমস্তপদ। সমাসবদ্ধ পদের প্রথম অংশকে বলা হয় পূর্বপদ এবং পরবর্তী অংশকে বলা হয় উত্তরপদ বা পরপদ।
সমস্যমান পদঃ
সমস্ত পদ বা সমাসবদ্ধ পদটির অন্তর্গত পদগুলোকে সমস্যমান পদ বলে।
যেমনঃ বিলাত হতে ফেরত বিলাতফেরত।
এখানে, ‘বিলাত’ ও ‘ফেরত’ এ দুটি শব্দই সমস্যমান পদ।
ব্যাসবাক্য, সমাস বাক্য বা বিগ্রহ বাক্যঃ
ব্যাসবাক্য: সমস্তপদকে ভেঙ্গে যে বাক্যাংশ করা হয় তাই হল ব্যাসবাক্য, সমাস বাক্য বা বিগ্রহ বাক্য।
যেমনঃ বিলাতফেরত বিলাত হতে ফেরত।
এখানে, ‘বিলাত হতে ফেরত’ হলো ব্যাসবাক্য।
সমাসের প্রকারভেদঃ
সমাস প্রধানত ৬ প্রকার। যেমনঃ
- (১) দ্বন্দ্ব সমাস
- (২) কর্মধারয় সমাস
- (৩) তৎপুরুষ সমাস
- (৪) বহুব্রীহি সমাস
- (৫) দ্বিগু সমাস ও
- (৬) অব্যয়ীভাব সমাস।
দ্বন্দ্ব সমাসঃ
যে সমাসে প্রত্যেকটি সমস্যমান পদের অর্থের সমান প্রাধান্য থাকে, তাকে দ্বন্দ্ব সমাস বলে। যেমনঃ
- তাল ও তমাল = তাল-তমাল,
- দোয়াত ও কলম = দোয়াত-কলম,
- মা ও বাবা মা-বাবা।
কর্মধারয় সমাসঃ
যে সমাসে বিশেষণ বা বিশেষণভাবাপন্ন পদের সাথে বিশেষ্য বা বিশেষ্যভাবাপন্ন পদের সমাস হয় এবং পরপদের অর্থ প্রধানরূপে প্রতীয়মান হয়, তাকেই কর্মধারয় সমাস বলে। যেমনঃ
- নীল যে পদ্ম = নীলপদ্ম,
- শান্ত অথচ শিষ্ট = শান্তশিষ্ট,
- কাঁচা অথচ মিঠা = কাঁচামিঠা।
তৎপুরুষ সমাসঃ
পূর্বপদের বিভক্তি লোপ পেয়ে যে সমাস হয় এবং যে সমাসে পরপদের অর্থ প্রধান ভাবে বোঝায় তাকে তৎপুরুষ সমাস বলে। তৎপুরুষ সমাসের পূর্বপদে দ্বিতীয় থেকে সপ্তমী পর্যন্ত যে কোন বিভক্তি থাকতে পারে। যেমনঃ
- বিপদকে আপন্ন = বিপদাপন্ন,
- মন দিয়ে গড়া = মনগড়া,
- বসতের নিমিত্তে বাড়ি = বসতবাড়ি।
বহুব্রীহি সমাসঃ
যে সমাসে সমস্যমান পদগুলোর কোনটির অর্থ না বুঝিয়ে, অন্য কোন পদ কে বোঝায়, তাকে বহুব্রীহি সমাস বলে। যেমনঃ
- বহু ব্রীহি (ধান) আছে যার বহুব্রীহি,
- আয়ত লোচন যার আয়তলোচনা,
- মহান আত্মা যার = মহাত্মা।
দ্বিগু সমাসঃ
সমাহার বা মিলন অর্থে সংখ্যাবাচক শব্দের সঙ্গে বিশেষ্য পদে সমাস হয়, তাকে দ্বিগু সমাস বলে। যেমনঃ
- তিন কালের সমাহার = ত্রিকাল,
- চৌরাস্তার সমাহার = চৌরাস্তা,
- তিনমাথার সমাহার = তেমাথা।
অব্যয়ীভাব সমাসঃ
পূর্বপদে অব্যয়যোগে নিষ্পন্ন সমাসে যদি অব্যয় এর অর্থের প্রাধান্য থাকে, তবে তাকে অব্যয়ীভাব সমাস বলে।
অব্যয়ীভাব সমাসে কেবল অব্যয়ের অর্থ যোগে ব্যাসবাক্যটি রচিত হয়। যেমনঃ
- জানু পর্যন্ত লম্বিত = আজানুলম্বিত,
- মরণ পর্যন্ত আমরণ।